রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫০ অপরাহ্ন
ব্যাসিকেলি ওয়েব সাইটের প্রাণ সঞ্চার করাই হলো ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজ। একটি ওয়েবসাইট কোনোভাবেই ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজ ছাড়া আপনাআপনি তৈরি হয়ে যেতে পারে না। তাকে তৈরি করে নিতে হয়। আর এই তৈরি করে নেওয়ার কাজটি করে একজন ওয়েব ডেভলপার। যিনি তার এই কাজটি করে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের বিভিন্ন সেক্টর ভিত্তিক কাজের উপর ভিত্তি করে। আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় হলো ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি এবং এর কমপ্লিট গাইডলাইন। আপনি যদি ফিউচার ওয়েব ডেভলপার হতে চান তবে আমি মনে করি আজকের এই আর্টিকেলটি পুরোটাই আপনার পড়া উচিত। কেননা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে আজ আমরা আলোচনা করবো।
ওয়েবসাইটের ডিজাইন বা চিত্রকে হাতিয়ার বানিয়ে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করাই হলো ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজ। এক্ষেত্রে একজন ওয়েব ডেভলপারকে ক্লায়েন্ট সাইড ভাষা ও সার্ভার সাইড ভাষা একসাথে করে একটি সুন্দর এবং অর্থপূর্ণ ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয়। পাশাপাশি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করার সময় ডিজাইন বা টেমপ্লেট, কনটেন্টম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং ডাটাবেসের সমন্বয় করতে পারাটাই হলো ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কাজের সঠিক পরিপূর্ণতা। কারো যদি PHP, MySQL এর পাশাপাশি HTML, CSS, JAVASCRIPT, JQUERY, Bootstrap সম্পর্কে ধারণা না থাকে তবে সে কোনোভাবেই এই ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজ করতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে w3 School অনেক গুরুত্ব পূর্ন একটি ওয়েবসাইট নতুন্দের জন্য
নতুন একটি ওয়েবসাইটকে তৈরি করা থেকে শুরু করে ইন্টারনেটে লাইভ করা অবদি একটি সাইটের ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজ চলতে থাকে। যার মধ্যে থাকা সকল কাজকে একসাথে করার নামই হলো ওয়েব ডেভেলপমেন্ট। যেহেতু একজন ওয়েব ডেভলপার একটি ওয়েবসাইটকে নতুন করে তৈরি করে ডেভেলাপ করছে সেহেতু কাজটি নিঃসন্দেহে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজ বলা চলে। আশা করি ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছেন।
কেনো শিখবেন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট তা জানার আগে একটিবার ভাবুন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কাজের প্রতি আপনার আগ্রহ আছে কিনা! আগ্রহ না থাকলে এই সেক্টরে নেমে অকুল পাথারে পড়া ছাড়া উপায় নাই। কেননা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কাজ শেখায় নিজের আগ্রহকে গুরুত্ব দেওয়া বেশি জরুরি।
এবার আসি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার কারণ বিষয়ে৷ বর্তমানে যেহেতু অনলাইন ওয়েবসাইটের চাহিদা বাড়ছে এবং প্রায় সকলেই একটি ওয়েবসাইটের পেছনে ছুটছে সেহেতু বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে এই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কাজের চাহিদা তুলনামূলক হারে বাড়তেই থাকবে। চাহিদা বাড়তি প্রেশারের সুযোগকে কাজ লাগাতে চাইলে আমি বলবো ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখে এই সেক্টরে ফোকাস করাটাই বেটার।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট উচ্চ আয়ের পেশার মধ্যে অন্যতম হওয়া এটলিষ্ট কাজের মূল্য নিয়ে আপনাকে টেনশন করতে হবে না। তবে কাজ না শিখে যদি সারাদিন ইনকামের কথা চিন্তা করেন তাহলে আপনি চরম বোকামির কাজটিই করবেন। কেননা কাজ না জেনে এই সেক্টরে কারো কোনো গতি হবে না। এই যুগে এক্সপার্টদের ভিড়ে আপনি বলতে গেলে হারিয়েই যাবেন।
আপনি কি জানেন ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজ কি? না জানলে জেনে নিন। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট একটি ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন তৈরির প্রক্রিয়া বলে কোডিং এবং প্রোগ্রামিংসহ যাবতীয় সকল কাজ এর আন্ডারে করতে হয়। চলুন ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কিছু কাজের সাথে পরিচিত হওয়া যাকঃ-
একটি ওয়েবসাইটে ডাটাবেস খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পার্ট। ডাটাবেসে একটি ওয়েবসাইটের সমস্ত ফাইল জমা রাখা হয় বলে ডেভলপারেরা এটিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। রিলেশনাল ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আরডিবিএমএস) ব্যবহার করে একজন ওয়েব ডেভলপার এই ডাটাবেসের কাজ করে থাকে।
ওয়েবসাইটের কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় এই ডাটাবেস একটি ওয়েবসাইটের তথ্য পুনরুদ্ধার, সংগঠিত, সম্পাদনা এবং সংরক্ষণের কাজ করে থাকে। ওয়েব ডেভলপারদের দ্বারা তৈরি করা ডাটাবেসটি একটি সার্ভারে চলে গেলে তবেই একটি ওয়েবসাইটকে ইন্টারনেটে পাওয়া যায় এবং ব্যবহারকারীরা তা ব্যবহার করার সুযোগ পেয়ে থাকে।
ফ্রন্টএন্ড কোড আকারে প্রাসঙ্গিক তথ্যের সাথে কাস্টমাইজড করার কাজ থাকে এই সার্ভার-সাইড পয়েন্টে। সার্ভার-সাইড স্ক্রিপ্টিং, বা ব্যাকএন্ড ডেভেলপমেন্ট একটি ওয়েবসাইট এর পেছনকার গল্প তৈরি করে থাকে। ব্যাকএন্ড মূলত কোনও ওয়েবসাইটের এমন একটি পার্ট যা কখনোই পাবলিকলি শো করা হয় না বা ব্যবহারী কখনোই তা দেখে না। ডেটা সংরক্ষণ এবং সেই সব কালেক্ট করার জন্য সুচারুভাবে ওয়েবসাইটটিকে চালানোর জন্য একটি ওয়েবসাইট এর এই সার্ভার-সাইড এর কাজ করা হয়।
ক্লায়েন্টের সাথে সামনাসামনি যোগাযোগ কিংবা ইউজার যদি সরাসরি ওয়েবসাইট ব্যবহার করার সুযোগ পেতে চায় তবে একজন ওয়েব ডেভলপারকে এই ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয় কাজ অর্থ্যাৎ সার্ভার-সাইড এর কাজ করতে হয়। বিশেষ করে একটি সাইডের কন্টাক্ট পেইজটি এই সার্ভার-সাইড দিয়ে তৈরি করা হয় এবং এটি তৈরি করার ফলে ইউজার ইজিলি ওয়েবসাইট কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
স্ক্রিপ্টিং, বা ফ্রন্টএন্ড ডেভেলপমেন্টের সাহায্যে এই ক্লায়েন্ট সাইড তৈরি করে একজন ওয়েব ডেভলপার। এটি একটি কোড এবং যা ওয়েব ব্রাউজারে কার্যকর করা গেলে ইউজার একটি ওয়েবসাইটে কি কি দেখতে পায় তা নিশ্চিত হয়! বিশেষ করে লেআউট, ফন্ট, রঙ, মেনু এবং প্রয়োজনীয় পেইজগুলি এই ক্লায়েন্ট সাইড সবচেয়ে বেশি জড়িত।
এটি যেহেতু একটি টেকনোলজি বিষয় সেহেতু এই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার সময় কতটা লাগতে পারে তা পুরোটাই নির্ভর করবে যে শিখবে তার উপর। সে যদি সবকিছু দ্রুত ক্যাচ করতে পারে সেক্ষেত্রে সময় কম লাগবে। এক্ষেত্রে আপনি যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে চান তবে আপনাকে প্রতিনিয়ত আপডেট থাকতে হবে। কেননা নতুন নতুন টেকনোলজি সাথে আপডেট থাকার ফলে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কিত বিভিন্ন আপডেট অনুযায়ী কাজ শেখা আপনার জন্য ইজি হবে। বিশেষ করে ওয়েবসাইট সম্পর্কিত গুগলে যেসব আপডেট আসে সেগুলির দিকে নজরদারিতে থাকা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট বলে আমি মনে করি। এতে করে ক্লায়েন্ট যেমন সন্তুষ্ট হবে আপনার কাজের মানও তেমন বাড়বে। তবে ঠিকঠাকভাবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে ৩ মাস থেকে প্রায় ১ বছরের বেশি সময় লেগে যেতে পারে৷ এটি আপনার শিখতে পারার ক্ষমতার উপর নির্ভর করবে৷
ওয়েবসাইট দেখতে কেমন হবে বা এর সাধারন রূপ কেমন হবে তা নির্ধারণ করে একজন ওয়েব ডিজাইনার। অন্যদিকে একটি ওয়েবসাইটের প্রাণ সঞ্চার করার দায়িত্ব পড়ে একজন ওয়েব ডেভলপারের কাঁধে। একটির কাজ ডিজাইনিং এবং আরেকটির কাজ ডেভলাপিং। এদিক দিয়ে দুটোই পুরোপুরি আলাদা সেক্টর। ডাটা প্রসেসিং, ডাটাবেস নিয়ন্ত্রণ, সিকিউরিটি নির্মান, ইউজার এবং এডমিনের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণকরা, এপ্লিকেশনের সকল ফিচারকে ফাংশনাল এবং ডাইনামিক করার কাজগুলি করতে হয় ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে। অন্যদিকে ওয়েবসাইটের ডিজাইনার সাজানোর কাজ করতে হয় ওয়েব ডিজাইনিং সেক্টরে। তবে ডিজাইনিং সেক্টরে যেতে হলে একজন ফিউচার ওয়েব ডিজাইনারকে ক্রিয়েটিভ হতে হয়।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করে কত টাকা আয় করা যায় তা নির্ভর করবে আপনি মান্থলি কয়টি কাজ পাচ্ছেন তার উপর। আপনি যদি কোনো প্রজেক্ট অর্ডারই না পান তবে ইনকামের আশা করা তো পুরোপুরি বোকামি। একজন জুনিয়র ওয়েব ডেভলপার শুরুতেই মাসে গড়ে ৮ লক্ষ টাকাইনকাম করে। কি? অবাক হচ্ছেন? হবারই কথা! তবে এটা আমাদের দেশীয় প্রাইজ না। এই পরিমাণ পেমেন্ট সাধারণত বিদেশীরা পেয়ে থাকে। আমি জাস্ট ধারণা থাকার জন্য এটি জানিয়ে দিলাম। তবে বাংলাদেশে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজ করে আপনি মাসে ২০,০০০ – ৩০,০০০ টাকা ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন। যদিও এই প্রাইজটি কেবল নতুনদের জন্য। যারা অনেক বছর আগে কাজ শিখে নিজেকে দক্ষ করে ফেলেছে তারা আরো বেশি ইনকাম জেনারেট করতে পারে।
Code: 33799